শুক্রবার, মার্চ ১১, ২০১১

কোন চাপ নয়, স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে খেলতে হবে প্রতিটি বল


চট্টগ্রামে আজ বাংলাদেশ মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ডের জানি, এদেশের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর মনের অবস্থাটা এখন কেমন অনেকেই আমাকে বলেছেন, আজকের ম্যাচ নাকি বাংলাদেশের বাঁচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচ কিন্তু আমি মনে করি এটা তাদের ভুল ধারণা হেরে গেলে তো সবই শেষ হারজিত খেলায় থাকবেই ম্যাচের আগে এতটা চাপ নিয়ে মাঠে নামাটা মোটেও সমীচীন হবে না খেলতে হবে একেবারে ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের মাঠে খেলতে গেলে দর্শক সমর্থন পাওয়াটা যেমন পস্নাস পয়েন্ট, তেমনি এই সমর্থন অনেক সময় অযাচিত চাপও সৃষ্টি করে এখন বাংলাদেশ দল হোম ক্রাউডের এই সাপোর্টকে কিভাবে নেয় সেটাকে কাজে লাগায়, সেটা তাদের বিষয়
টসে জিতে আগে বাংলাদেশের কোন্টা আগে বেছে নেয়া উচিত? প্রশ্নের জবাবে বলব, যারা মাঠে খেলবে, তারাই সবচেয়ে ভাল বুঝবে টসে জিতলে কোন্টা আগে বেছে নেয়া উচিত কেননা, এটা তাদের মাঠ, এখানে তারা প্রচুর খেলেছে তবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো পর্যনত্ম সব হয়েছে ঢাকার মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজকের খেলায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এটাই হতে যাচ্ছে প্রথম ম্যাচ এখানকার উইকেট কেমন, সেটা ঠিক বলতে পারছি না তবে টিম যেহেতু সম্পর্কে ভালভাবে অবগত, তাই টস জিতলে কোচ, অধিনায়ক টিম ম্যানেজমেন্টই ঠিক করবে পিচে আগে কি করা উচিত তবে আমি মনে করি, খেলাটি যেহেতু দিবারাত্রির হবে এবং সন্ধ্যার পর 'ডিউ ফ্যাক্টরের' কারণে স্পিনারদের বল করতে সমস্যা হবার ব্যাপারটি আছে, সেহেতু বাংলাদেশের উচিত টস জিতলে আগে উইলোবাজি করা অবশ্য ব্যাপারে টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা ভাল মনে করবেন, সেটাই করবেন ব্যাটিং করার ব্যাপারে 'টাইগারদের' প্রতি আমার উপদেশ থাকবে, তারা যেন ব্যাটিং করার সময় স্কোরবোর্ডে কত রান হলো, সেদিকে না তাকায় নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলার চেষ্টা করলেই দলের ভাল স্কোর হবে এর আগেও যেমন অতীতে হয়েছে প্রতিটি ব্যাটসম্যানদের উচিত প্রতিটি বল দেখেশুনে খেলা বলের মেধা-গুণ যাচাই-বাছাই করে খেলে পার্টনারশিপ গড়ে দলের ইনিংস গড়ে তোলা তা হলেই আশা করি প্রতিপৰের জন্য লড়াকু স্কোর হয়ে যাবে
ইংল্যান্ডের জন্য এই পিচে খেলাটা নতুন অভিজ্ঞতা হবে ফলে তারা যে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে না, সেটা অনুমান করা যায় বাংলাদেশকে ঠিক এই ব্যাপারটিই কাজে লাগাতে হবে কড়ায়--ায় চেপে ধরতে হবে তাদের শুরম্ন থেকেই, যেন তারা উল্টো নিজেরাই চাপে পড়ে যায়
জানা গেছে, বাংলাদেশ দলে আজ মোহাম্মদ আশরাফুলকে খেলানো হবে না অনেকেই আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, গত খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরম্নদ্ধে যেখানে গোটা বাংলাদেশ দল খারাপ খেলেছে, সেখানে আজকের খেলায় শুধুমাত্র আশরাফুলকে বাদ দিয়ে বলির পাঁঠা বানানো কি ঠিক হয়েছে? বিষয়ে আমার অভিমত হচ্ছে, টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধানত্মই হচ্ছে চূড়ানত্ম সিদ্ধানত্ম সব সময় মনে রাখতে হবে ব্যক্তির চেয়ে দল বড় আশরাফুলকে নিয়ে ম্যানেজমেন্টের হয়ত অন্য কোন পরিকল্পনা আছে আজকের খেলার যে 'গেমপস্ন্যান' করা হয়েছে, তাতে হয়ত আশরাফুলকে তারা যোগ্য মনে করেননি কাজেই তিনি দলে নেই এটাই স্বাভাবিক শুনেছি আশরাফুলের জায়গায় খেলানো হবে মাহমুদউলস্নাহ্্ রিয়াদকে আমি মনে করি তিনিও চমৎকার একজন ক্রিকেটার এখন অন্য একজনের পরিবর্তে পরিস্থিতি অনুযায়ী আজকের ম্যাচে যে তাকে খেলানো হচ্ছে, সেটা তাকে মাঠে পারফর্ম করে দেখাতে হবে আশা করি, সেটা নিশ্চয়ই পারবেন
সবশেষে আসি ইংল্যান্ডের প্রসঙ্গে তারা এমন একটি দল, যারা পর্যনত্ম তিনবার বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে একবারও জিততে পারেনি শিরোপা কিন্তু তার পরও পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখবেন, তারা কিন্তু প্রায় প্রতিটি আসরেই ভাল খেলে কমপৰে নকআউট পর্বে যায়- ইনজুরির জন্য দল থেকে বাদ পড়ে ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপ খেলা শেষ হয়ে গেছে কেভিন পিটারসেন স্টুয়ার্ট ব্রডের কোন সন্দেহ নেই তারা বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান বোলার অনেকেই মনে করছেন এদের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য সুবিধা হবে আমি সেটা মনে করি কেননা, ইংল্যান্ড দলে পর্যাপ্ত 'ব্যাক-আপ' ক্রিকেটার আছে সেভাবেই তাদের বিশ্বকাপ স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে কাজেই তাদের অনুপস্থিতিতে দল সমস্যায় পড়বে, এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই ওসব না ভেবে আমাদের নিজেদের খেলা নিয়ে ভাবতে হবে
সবশেষে বাংলাদেশ দলের সাফল্য কামনা করি, তারা যেন দেশের মানুষের মুখে আবারও হাসি ফিরিয়ে আনতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন